বাক্‌ ১৪৪ ।। শতানীক রায়ের গদ্য ।। কররেখা


 

সামনের দিকে নদী পাহাড় যত পেরিয়ে যাই পেছনের গ্রহটাকে পৃথিবী বলে মেনে নিতে আশ্চর্য হয়। ঘটনার কাছে অনেক কিছু। যেভাবে ঘটেছে যার যার আওয়াজে এই তামাম মৃত্যু। তামাম কৌতূহলে ফিরে পেতে টান জাগে। যে-সব ঘরগুলো ঘিরে ভেঙে গিয়ে চূড়ান্ত নরম আমোদ ঝলকানি। ঝলকানি মাছের চামড়ায়। যেদিকেই তাকাই ভাঙা বাড়ি আর সে-বাড়ির তুলসিতলা এখনও আপ্রাণ জেগে। সামনের দিকে যত বছর দিনগুলো... আমি কীভাবে রদবদল করে ভেবে ফেলি রগরের ইতিহাস। ক্লান্তি আর ভ্রম কত কী। তোমাদের আজ অংশ হতে হয়েছে উঁচু কাহিনির উঁচু উঁচু গাছের মন প্রাণ ফিরে পাওয়ারও এক বন্দনা শিখে নিতে আমন্ত্রণে আসতে হয়েছে। মানুষকে পালিত করে রাখার এইসব গতির অঙ্গ। নির্মম নদী বয়ে যাওয়ার জন্য আর সবকিছু... ঘন জঙ্গলের রোদ-অন্ধকার কেটে বেরোনোর অপেক্ষা। যার আর কোনোকিছু নেই। যদি ঘরটা হঠাৎই জেগে উঠে আছড়ে পড়ে যথাতথা। এই ঘরগুলো এতই একা নিঃসঙ্গ রাতের অন্ধকারে একে-অপরকে চিঠি লেখে গান গায় গান শোনে শাখা গজিয়ে আকাশটাকে দেখে। অদ্ভুত এ-সব। জঙ্গমে ভরা কাহিনি বলার কেউ নেই সেখানে আদরের অক্ষর মাটি কিংবা রদবদল কিছুই নেই। এখানে তোমরা দেখো হাতিঘোড়া বাঘসিংহের শৈশব। সূর্য ওঠা শুধুই আখ্যানকে ঘিরে। নদীও কোনো কোনো দিন ঘরের পাশ দিয়ে গিয়ে... যাকে আমি নাম দিয়েছি ভুবনবতীহয়তো ভুল নয়, যত্রতত্র আলোড়ন। এই যত্র আলো হাতে নিয়ে ভোরে উঠে দেখা রাতের শেষ অন্ধকারে ঘরগুলো কীভাবে শাখাপ্রশাখা করে আকাশে নক্ষত্রলোকে ছড়িয়ে গেছে। আমাদের মতো মানুষেরা গাছে গাছে ঘোরে বিকেল দেখে পাতাভরা বাগানে হামাগুড়ি দিয়ে জেনে নেয় ইতিহাসে কোনো পথ ছিল না পথ তৈরি করা চলেছিল। আমাদের থেকে আলাদা হয়ে কখনো আবার আমাদেরকেই জঙ্গল ডিঙিয়ে পুকুর অন্ধজলা ডিঙিয়ে কোন এক অপারে গিয়ে পড়া। কোন এক প্রদর্শনীর আদর্শ অংশ সবই যা... জঙ্গলে জঙ্গলে খুঁজে অনেক হামাগুড়ি দিয়ে গাছে গাছে ঘুরে পুনরায় বাড়ি ফিরে বিচরণ করে কত কী দেখে নিয়ে তারপরে অনেকদিন অনেক আচরণ নিয়ে ভেবে একদিন এই উৎপাদন। মানুষের এই সমস্ত অনাবিল অজস্র নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগোনো। অনেক পেছনে ফেলে। অনেকদিন আলো আকাশের নক্ষত্রে মিশে... এগোনো আর পিছোনোকে কেন্দ্র করে বিস্তর।     

14 comments:

  1. অনন্য এই গদ্য। আমি একে কবিতাও বলবো

    ReplyDelete
  2. অনবদ্য। এর গভীরতা কোথায় যে পৌঁছে দেয়৷ প্রীতমদা

    ReplyDelete
  3. এই হলো গদ্য। ভীষণ মায়াময়।

    ReplyDelete
  4. অনবদ্য। খুব সুন্দর একটা কবিতা পড়লাম মনে হলো ।

    ReplyDelete
  5. অসাধারন। প্রথম লাইন টাই আস্ত একটা কবিতা।

    ReplyDelete
  6. তোমার সাম্প্রতিককালে লেখা গদ্যগুলি আমি কবিতা হিসেবে পড়ছি।
    চেতনার গভীর স্তর থেকে উঠে আসা লেখা।
    ভালোবাসা।

    ReplyDelete
  7. লেখাটি বেশ ভালো লাগলো

    ReplyDelete
  8. ভালো লিখেছ শতানীক। তুমি যেমন লেখ। লেখাটির মধ্যে তীব্র মনস্তত্ত্ব আছে। আছে নিজের দৃশ্যকল্পনা দেখার আনন্দ। আমি তোমার অগ্রজ হয়ে এতটুকুই বলব। বড় লেখার জন্য প্রস্তুত হও।

    ReplyDelete
  9. অসামান্য গদ্য । গদ্যটা একটু বড় পরিসরে হলে আরও ভাল লাগত । কেননা, লেখাটিতে একটা মায়ার জন্ম হয়েছে যেন । একটা দৃশ্যের অনবদ্য ঘোর, কুয়াশার আস্তরণ, যা ক্রমশ গদ্যটির সঙ্গে আমার প্রাণকে এক করে দিল । ভীষণ ভাল লেখা শতানীক ।
    ।।শুভদীপ নায়ক।।

    ReplyDelete
  10. একটি বৃহৎ কবিতা পড়লাম ।অসাধারণ । গদ্য ও পদ্যের সীমানা মুছে দিয়েছ ভাই।

    ReplyDelete
  11. গদ্যটা যেমন গদ্য একইসঙ্গে কবিতাও। আরো ভালো করে বললে গদ্যের মধ্যে দিয়ে কবিতার প্রবাহ। খুবই ভালো লাগলো শতানীক।

    ReplyDelete
  12. এরকম লেখা আরো চাই।

    ReplyDelete
  13. ঘোরের মধ্যে লেখা কী এক তীব্র বিষাদ উপচে উঠছে। খুব ভালো লাগল।

    ReplyDelete