বাক্‌ ১৪৪ ।। মিতা চার্বাক



পুনরুত্থিত সাইরেনের সংলাপ


তেইশ রাত্রির গায়ে যত ঘুম পড়ে ছিল তার ভিতর
ভাঙা ডানার স্নায়ুতন্ত্র গুটিয়ে নেয় অন্ধকারের আঙুল
ভূ-গর্ভস্থ পানির পাইপ বেয়ে নিচুমুখী নিস্তব্ধতা উঠে আসে
আর কিছু অঘোর মাছের চোখ


নগরের প্রধান ফটকে ঈশ্বরের সর্বনামে বাজি পোড়াচ্ছে কেউ কেউ...কিছু পায়চারী শিশুতোষ সার্কাসের তাবুতে...  মউজে হার্টবিট রেখে দিয়েছে বাঘের খাঁচার সামনে। পুনরুত্থিত সাইরেনের সংলাপ শেষ হওয়ার আগেই কুয়াশার মিথ ঠেলে আকাশ থেকে নামে জনশ্রুতির ঘোড়া। তাকে বুধবারের রূপকথা বলা যায় কখনও কখনও। সুগন্ধি গুল্মে পেচানো স্তনে মুখ লাগিয়ে শিশুটি খলখল হাসে... এটি আরেক ধরণের রূপকথা। 

এই দুই দৃশ্যের মাঝে ধরো, নিপাতনেসিদ্ধ 
আমরা এক অনাথ মুহুর্তের ছোটগল্প 






অনেক রঙের সকাল ফোটে 



আরও উত্তরদিক থেকে কাউন ক্ষেতের মিশালি বাতাস নিয়ে আসে গেটলক বাস। পিছন পিছন ছুটে একটা ফজরের ওয়াক্ত। আলো ফুটে উঠার অনেক আগে, তখনও পুকুরের নির্জনতায় ভাসমান জ্যোৎস্নার টেক্সচার। রৌমারি বাসস্টপে পোলাওপাতার ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিয়ে চলে গেছে এক অন্ধ শামান
ওই পথেই ছিমছাম পাখিদের কর্মশালা
রুপোলী মাছের মেঘবিলাস বিষয়ক পুরাণ।

অনেক রঙের সেলাইয়ে একটা সকাল ফোটে
রোদের আয়ন ছড়ায় ভাওয়াইয়া ভূমে 
দ্বিধাবিভক্ত নীলঘুমের নকশা জেনে
রৌদ্রোজ্জল সিরিজে পাতায় জমে ক্লোরোফিলের হেল্যুলুইয়া

গাড়ির চাকার ব্যয়বহুলতা ছাপিয়ে
দূরবর্তী কোথাও ধান ভানার শব্দ পেলেপুষে বড় হয়
ঢেঁকির শরীর জুড়ে ঘামে পাহাড়ি গীত
আরিরাং আরিরাং আরারিও...





সালভেশন



পুরোনো স্টুডিওর আয়নায় লেগে থাকা সস্তা লিপস্টিকের দাগ
অপুষ্পক ধারণায় সন্ধ্যা মেখে ঘুমিয়ে আছে

এমন ছায়ামেঘ আলাপচারিতায় কিছু বিচ্ছিন্নগণিতের দুপুর। স্নানঘরে শরীরি জল গড়ায়... মাছেদের গ্লুমি চোখে। ভাদ্রশেষের আকাশ ঠিকঠিক মাথার উপর এলে বশিষ্ঠের কাছাকাছি পুনর্বসু দাঁড়ায়। আর আমরা বোধহয় ক্রো-ম্যাগনন মানুষের জঠর থেকে ছিঁটকে আসা কিছু তন্ময়ঘোর... অহেতুক সাঁতরাই ক্রেপপেপারের বক্রতায়। 

যা কিছু ব্যক্তিগত অনিশ্চয়তা 
দাতব্যের ধরণে কান পেতে শুনি
শামুকের খোলে আটকে থাকা সমুদ্রের রুহু
কবেকার নোনা? 
কারা হারিয়েছিল নাজাতের কারুকাজ? 
কার জানালার নিচে জমা হয়
কিশোরী আমানকরের অনিদ্রাজনিত রাগ? 

এইসব প্রজননের উইল... ভেজা ভারি জুতো
কী জঘন্যতম বালির কিচকিচ
আর আমাদের জীবন ঘনিষ্ঠ খানিক মর্মর ছুঁয়ে থাকে ঘাসের আঙুলে... নিশিমানুষের পরাবীজে।

তারও ভিতরে মেঘের হরফে এক পাখিচক্র
কর্পূরের মিহি গন্ধে দেখ...আমাদের রাত ভাসছে 
পৃথিবীর সর্বশেষ অন্ধকার হারানোর আগে 
স্নায়ুতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটাবে সবুজ রাত্রির ডালপালা 
যেখানে বাধাহীন পথের ধারণা... দুস্প্রাপ্যের ডাকঘর

2 comments: