বাক্‌ ১৪৪ ।। রূপায়ণ ঘোষ



মায়াবল্লরী 

মায়াং তু প্রকৃতিং বিদ্যান্মায়িনং চ মহেশ্বরম্।
তস্যাবয়বভূতৈস্তু ব্যাপ্তং সর্বমিদং জগৎ।। 
                                         - শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ 


এই প্রথম, অরণ্য পেরিয়ে অবস্থানের দিকে চলেছি
সুযোগী কালের মতো সংগ্রহ করি অশ্বেন্দ্রিয়
হে সমবেত অচক্ষু আত্মারা,
                                      মুক্ত হও
ক্রমশ সসাড় হচ্ছে ইশ্বরিত লোকালয়
ভোরের আলো এসে অপ্রভ মায়াকে সরায়।
পৃথিবীর এই আশ্চর্য বিরুদ্ধ ক্রিয়ায়
রাত্রি ও ভোর অকুণ্ঠ বিপরীতগামী ভেসে যায়...

তারপর সেখানে মোহ নেই-
মৌনতা ছেড়ে, চলেছি বাক্যময় ঢেউয়ের দিকে 
যারা ব্রহ্মহীন সমগ্ৰকে বলেছিল
                                 প্রকৃত সম্মোহিত চরাচর;
এখানে তাদের মোহিত সত্তার দু'হাতে জীবন ও মৃত্যু দিলে
দস্যুতা ভেসে যায়, ক্ষমা পড়ে থাকে... 





দেখেছ কী উজ্জ্বল অসুখ 

দ্যাখো আগুন ফুটছে বিম্বের উপর
                            দ্যাখো আলোমদ্য রাত-
আকাশে ভেসে যাওয়া কামনাগামী মেঘ
তেজ ও জল আনে,
আনে অখণ্ড বিপরীতমুখী ভিড়-
নির্বাহিত সমস্ত পৃথিবীর কাছে
মানুষের সুদীর্ঘ অন্ধকারে
স্বগত শূন্যস্থান পেরিয়ে ভুলেরা জন্মায়!
প্রতিটি ভুল আসলে নিজস্ব কৈফিয়ৎকারী ভ্রমর
অকস্মাৎ উড়ে যেতে যেতে
সমাগত মৃত্যুর মধুবীজ বৃক্ষের দিকে ছোটে...

বিম্বিত চোখের নীচে ছায়া ফেলে সুষুপ্ত আয়নারা
ক্রোমোজ্জ্বল অসুখের পাশে 
প্রার্থনা রাখে অচির আয়ুধ...
অথচ কী উজ্জ্বল রুগ্নতা-
অনশ্বর চেতনের ধার বেয়ে
আলোমদ্য রাতের উৎসব গড়ে স্খলিত শরীর।



4 comments:

  1. দুটোই কবিতাই ভালো লাগল। এটা তোমার সিগনেচার কবিতা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভালোবাসা নিয়ো অনেক...

      Delete
  2. অপূর্ব! দারুণ রে।

    ReplyDelete
  3. সেই উপমাবিদ্ধ লাইন দুটিতেই--- জীবনদর্শন।

    ReplyDelete