বাক্‌ ১৪৪ ।। সম্বুদ্ধ ঘোষ



বিম্বের ওইপারে

কেবলই উদ্বৃত্ত রঙ, স্তনে নখক্ষত, পদ্মপাতায় বিন্দুজল
জানান দিয়ে গ্যালো

রোহিণী নক্ষত্রের তলে অস্মিতার এই আমিনাদগুলি
নিরন্তর বিবর্ণ হয়, চোখের কোটরে শুকোয় মৃগতৃষা;
বিম্বের ওইপারে চেয়ে থাকে অপরমানুষ,
জলগল্পের অলীক ফসিল, নোনাধরা পাথুরে প্রবুদ্ধ

এপার থেকে বাষ্পঘনায়মান কাঁচের দূরত্বে নীলশীত,
ওইপারে দাঁড়িয়েছে এক কৃশ কিন্নর মেরুদূরাতীত; 
শুধু ক্লান্তিহর তুমি, আমার ধুলোবালি জটাকাটা চুলে,
বুলোচ্ছ আঙুল সান্দ্রতায়, ঘুমের ভিতর এক অন্যঘুমকালে। 


আমার দীঘল দিওতিমা, একযুগ অন্ধকার আগে
কোথায় গৃহসম নিবিড় আর পেরেছি দিতে বলো? 

আজ আছি উজ্জ্বল কোলাহল আর নগরীর ছায়াগড়া রোদে
আমাদের ছিঁড়ে ফ্যালা নাড়িদাগ, গোপনীয় ক্ষত 
চাপা পড়ে গ্যাছে সব নয়নজুড়ানো। 

আদরের রেখাটি যেখানে ঘিরে থাকে দ্বিতল চিবুকের ভাঁজে
সেখানে মরসুমী বিগতবকুল ঝরে সন্ধানী পাহাড়ের খাঁজে; 
করাল মোকাসিন জুতোর নীচে কিছু নরম, সুপিষ্ট ফুল,
ক্ষমার চেয়ে বেশি গাঢ় লাল, জঙ্গলের সংবৃত অঞ্চলে

যেন দিব্যতার ছিন্নমূল চিহ্ন যা কিছু ছিল,
বিম্বের ওইপার থেকে ডালপালা ছড়ালো; 
আমাদের ছলোছল নদী, বিরহের বৃষ্টিচ্ছায়াতলে 
অরোরার আলো ফিরিয়ে দিল দূর নক্ষত্রমর্মরে।


1 comment: