বাক্‌ ১৪৪ ।। হিমাদ্রী চৌধুরী



ওয়াক্ত

জোহরের ওয়াক্ত রক্তজবার লাল নয়,
মোরগ ঝুঁটির নেতিয়ে পড়া বার্ধক্যের
হাতছানি, —  জানালার  শরীর বেয়ে,
নেমে পড়ছে ক্ষয়িষ্ণু  বিকেলের  হ্রদ,
মাগরেবের সাইরেনে অদেখা বৃষ্টিযান
হাঁটে পরিচিত পথ

ধোঁয়ার কাঠিতে মুখ গুঁজে এখনো
অন্ধ নামায় দাদিমার হারিকেন, 
ক্রমশ বোবা জোনাক পুরুষ, — পোঁদ
পাসপোর্টে ঝুলায় ইশ্বরের সিল,
প্রস্তুত তারও বিছানা, রতিবনবৃক্ষ
সুন্দরী বাতাসা ঋতু

কেটে কেটে যায় পতাকাবাহী বাতাসে
ডাকাতের হা রে রে রে
ডাস্টার তলে ঘুমিয়ে পড়ে আমার বন্ধু নিরঞ্জন

প্রভুভক্ত কুকুর সূর্য দেখে না।



শুচিস্নান

একদিন পৃথিবীর শীতকাল পেরিয়ে হলুদ পাতাদের সংসারে জমা হবে অনন্ত বৃক্ষরাজি।সবুজ মদে ডুবে পিঁপড়ের দল পথ হারাবে, —আগুনের প্যারাসাইটিক আদরে।চিরহরিৎ শষ্যায় ফাগুন মানেই শুচিস্নান

ফুল গ্রামে ফুল নাই
পাতার শহরে পাতা নাই

মদের গেলাসে ভাসমান বরফ, নাফ নদীর ওপাশে হাসবে বার্মিজ শাদা মেয়ে।



জন্ম

ধানক্ষেত ভেঙে পালিয়ে যাচ্ছে  হোটেলবয়, পরিবেশিত সালুনে বসছে নোনামাছি

টেবিলে ভাতের রঙ শাদা
টেবিলে ভাতের রঙ পাখি

ওড়না পরা গাছের পাতায় জন্ম হলুদ রোদ।


ইচ্ছেভ্রম

কেউ জানেনা,
পাখিদের সভায় কিসমিস প্রসঙ্গে কতগুলো 
নগ্ন গল্পের লাইন লিখা আছে

বিমান বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ওরা জাত ভাই
মনে কোরে,
এরোপ্লেন গুলোকে নিতান্তই মূর্খ শাবক ভেবে নেয়

রানওয়ে ধরে ছুটে
লাফিয়ে উঠে শাদানীল ওড়নায়
তর্জন গর্জন
মুখস্থ ব্যারিকেড

মানুষ আজও পাখিই হতে চায়
হতে চায় আকাশগঙ্গার স্রোত

পাখিরা খুঁটে খায় হলুদ রোদের পাহাড় ঘুম
মানুষ নিজেরাই নিজেদের খায়।


চিরন্তন কমিউনিস্ট


সংকোচ না কোরে, আঁকড়ে ধরো নারীর পিরামিড। ট্রাফিক থেকে সরে গ্যালে লাল আলোর দার্শনিক ইশারা, দূর্ঘটনার বোমারু বাহন রটিয়ে দিতে পারে 
অস্থিচূর্ণ ধুলিঝড়।

বিন্দুও বৃত্তের ভিতর নিজেরে সিংহ মনে করে,
শিকারের অভাবে ক্রমশ ইরেজার হয়ে যায় ফাঁপা সন্ধ্যায়,— রাক্ষসতীরে।

রমনে মেতো, ভ্রমণেও, 
আদিবাসী হাওয়ার চিরন্তন কমিউনিস্ট, 
তার কাছে ফিরে যাও, — ওই মাতৃগ্রামে, দুগ্ধস্নাত
স্মৃতি 

উর্বর দোআঁশেই কৃষক সুপ্রাচীন কলাকার।

3 comments:

  1. খুব ভালো কবিতা। গভীর জীবনদেখা লক্ষ করলাম। বিপুলভাবে ভাঙতে ভাঙতে গড়ে ওঠা।

    ReplyDelete
  2. অসাধারণ লেখনী

    ReplyDelete